বানিয়াচং স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৫০ শয্যায় উন্নীত হচ্ছে
অবশেষে ৩১ শয্যাবিশিষ্ট বানিয়াচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৫০ শয্যায় উন্নীত হচ্ছে। এ লক্ষ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সীমানা প্রাচীরসহ একটি অত্যাধুনিক ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বানিয়াচং-আজমিরীগঞ্জ নির্বাচনী এলাকার এমপি অ্যাডভোকেট আবদুল মজিদ খানের ৪ বছরের দৌড়ঝাঁপের ফলে মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।
উপজেলার সাড়ে ৩ লক্ষাধিক লোকের চিকিৎসা সেবার একমাত্র ভরসাস্থল এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি দীর্ঘদিন ধরে দুরবস্থায় পড়ে রয়েছে। রোগী আছে তো ডাক্তার নেই। ডাক্তার আছে তো ওষুধ নেই। এক্সরে-জেনারেটর অকেজো। মেরামত করার পরও টেকনিশিয়ানের অভাবে পড়ে থাকায় পুনরায় নষ্ট। জরুরি বিভাগে যেখানে রোগী দেখা হয় ঠিক তার উপরে মহিলা ওয়ার্ডের বাথরুমের করুণ অবস্থা। এজন্য ময়লা পানি উপচে কর্তব্যরত ডাক্তার ও রোগীর ওপর পড়ে অহরহ। মাঝে মধ্যে জোড়াতালি দিয়ে মেরামত করা হলেও পুনরায় পূর্বাবস্থা ফিরে আসে। দীর্ঘদিন পর হাসপাতালে গাইনি চিকিৎসক নিয়োগ দেয়া হলেও প্রায় দিনই কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকেন। এ পরিস্থিতিতে প্রসূতি মায়েদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় এবং জটিল অবস্থার সম্মুখীন হলে জেলা সদরে দৌড়াতে হয়। আবার বাধ্য হয়ে গরিব ও অসহায় রোগীদের স্থানীয় অশিক্ষিত ধাত্রীদের মাধ্যমে সন্তান প্রসব করাতে হয়। এ কারণে অনেক ক্ষেত্রেই দুর্ঘটনা ঘটার খবর পাওয়া যায়। একজন দন্ত চিকিৎসকের বিরুদ্ধেও জেলা শহরে চেম্বার খুলে প্রায় দিনই অফিস চলাকালীন সময়ে প্রাইভেট প্রাকট্রিসে মগ্ন থাকার অভিযোগ রয়েছে। ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের বিরুদ্ধেও কাজের প্রতি দায়িত্বহীনতার অভিযোগ শোনা যায়। তাদের অনেকেই মাসের পর মাস কাজে না এসে মাসিক চুক্তিভিত্তিক প্রক্সি লোক দিয়ে ইচ্ছেমতো কাজ চালাচ্ছেন। শুধু প্রতি মাসে বেতন নেয়ার সময় ওইসব কর্মচারী কর্মস্থলে আসেন। এসব কারণে ওয়ার্ডবয় ও সুইপারকে দিয়ে রোগীদের শরীরে ইনজেকশন-সেলাইন পুশসহ অন্যান্য সেবা কার্যক্রম চালানো হয় বলে রোগীদের অভিযোগ। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি কাগজে-কলমে ৩১ শয্যাবিশিষ্ট থাকলেও বাস্তবে অধিকাংশ সিটই ভাঙাচুরা অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায়। বেশকিছু ভাঙা সিটের অংশ এক কোণে জড়ো অবস্থায় পড়ে থাকতেও দেখা যায়। রোগীদের সিটের উপরে থাকা অনেক বৈদ্যুতিক পাখাও অকেজো অবস্থায় থাকতে দেখা যায়। পুরুষ ও মহিলা ওয়ার্ডের নোংরা পরিবেশে বসবাস করে রোগীদের সুস্থ হওয়ার পরিবর্তে আরও অসুস্থ হতে হয় বলে অনেকেই হাসপাতালে থাকতে চান না। সম্প্রতি মন্ত্রণালয়ে সুমতি দেখে এলাকাবাসী সন্তোষ প্রকাশ করেছে।